সিংড়া রেসিপি

সিংড়া রেসিপি  -নাম শুনলে খেতে চাই মন। এই সিংড়া রেসিপি  উৎস জানা যাক। এটা মোটেই বাংলার সৃষ্টি নয়, বরং সেই সুদূর আরব থেকে এ দেশে এসেছে সিঙাড়া। নামের মতো বদলেছে পুরের উপকরণও। মাংসের সিংড়া  রূপ পেয়েছে আলুর পুর ভরা সিংড়ার।

সিংড়া রেসিপি

শীতের জলখাবারে ফুলকপির সিংড়ার সাথে গুড়ের রসগোল্লা। কিছুদিন আগেও এটাই ছিল বাঙালির আভিজাত্যের এক মাপকাঠি। এখন আধুনিক পশ্চিমমুখী খাবারের ঝোঁকে আর ডায়েটের চাপে এসব খাবারের সাথে সম্পর্ক কিছুটা টালমাটাল হলেও আলুর সাথে বাদাম মেশানো মশালাদার পুরের সিঙাড়া কবে যে ঢুকে গেছে বাঙালির বৈঠকখানার আড্ডার সংস্কৃতিতে, মালুম নেই কারোরই। অথচ ইতিহাস বলছে এই সিঙাড়াও কিন্তু এসেছে সেই পশ্চিমের পথ ধরেই।

সারা ভারতবর্ষে যা সামোসা নামে বিভিন্ন ধরনের পুরের বাহারে খাদ্যরসিকদের মন জয় করেছে, তার উৎপত্তি সেই সুদূর আরবে। যদিও সেই দশম-একাদশ শতাব্দীর আরবি রান্নার বইয়ে পাওয়া সাম্বুসকের সাথে ভারতীয় সামোসার অমিল অনেক, কিন্তু তাহলেও এটা স্পষ্ট যে কালের প্রবাহে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ এই মাংসের আর নানা মশলার সাথে কাঠবাদামের গুঁড়ো মেশানো পুরের তিনকোণা ময়দার মোড়কে ভাজা নাস্তাটিকে আপন মনের মাধুরি মিশায়ে করে তুলেছেন নিজেদের সংস্কৃতির অঙ্গ। পর্তুগীজদের হাত ধরে দেশে সপ্তদশ শতকে আলু আসার পর সামোসায় মাংসের জায়গা নিয়েছে আলু আর সেই রেসিপিতেই মাত তামাম ভারতীয় উপমহাদেশ।

সাম্বুসক শব্দের সা বা সহ কথাটি একটি আরবি শব্দ যার অর্থ তিন। যেমন সহ তার বা সেতার যা আমরা তিন তারের বাদ্যযন্ত্র হিসাবে চিনি। আর আম্বোস কথাটার আরবি অর্থ এক বিশেষ ধরনের রুটি। দুয়ে মিলে তিনকোনা রুটির মোড়কে মোড়া সুস্বাদু স্ন্যাক্স। যা কি
 না সহজেই বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় ভ্রমণের সময়ে। তাই বেদুইন ব্যবসায়ীদের বোহেমিয়ান জীবনের এক মনপসন্দ খাবার ছিল এই মাংসের কিমা ভরা সাম্বুসক। আজও এই একই নামে আর রন্ধনপ্রণালীতে তাদের দেখা মেলে আরবের বিভিন্ন প্রান্তে। উটের পিঠে বা রাতে আগুনের ধারে, মরুর মাঝে রসনাতৃপ্তি আর উদরপূর্তির এ এক অনবদ্য আয়োজন।

সিংড়া রেসিপি উপকরণ

  • ময়দা – ২ কাপ
  • লবন – ১/৪ চা চামচ
  • তেল / ঘি – ৪ চা চামচ
  • কালিজিরা – ১/২ চা চামচ
  • পানি – পরিমান মত

পুরের জন্য –

  • আলু – ৪ টা
  • পেঁয়াজ কুঁচি – ২ চা চামচ
  • জিরা – ১/২ চা চামচ
  • তেল – ২ চা চামচ
  • কাচামরিচ কুচি – ২ চা চামচ
  • রাঁধুনি মাংসের মশলা – ২ চা চামচ
  • বাদাম – ৪ চা চামচ
  • ধনেপাতা কুঁচি – ২ চা চামচ
  • ডাবলি বা মটর সেদ্ধ – ১/২ কাপ
  • লবন – স্বাদ মত
  • ভাজার জন্য তেল – পরিমান মতো

 রন্ধন প্রণালী  

– ময়দাতে ঘি / তেল ময়ান দিন। বাকি সব দিয়ে একটা শক্ত ডো বানান।

–পাতলা ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে দিন ১/২ ঘন্টা।

– পুরের জন্য আলু কিউব কাট করে সামান্য হলুদ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন।

– প্যানে তেল গরম করে জিরা / পাঁচফোড়ন দিন।

– পেঁয়াজ কুঁচি ও বাকি মশলা ভুনে আলু সেদ্ধ দিন। মাখা মাখা হলে বাদাম, ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে নিন। চাইলে নিজের পছন্দমত সবজি / কলিজা দিয়েও আলুর পুর বানিয়ে নিতে পারেন।

– এবার শক্ত ডোটা আবারো একটু মথে নিন।

– একটু লম্বাটে রুটি বেলে মাঝখান থেকে কেটে নিন।

– ছবিতে দেখানো ভাজ অনুযায়ী আলুর পুর ভরে সিঙ্গারা বানিয়ে নিন।

– ডুবো তেলে অল্প আঁচে সময় নিয়ে ভাজুন।

দরকারি টিপস 

– ডো অবশ্যই বেশ শক্ত হতে হবে এবং খুব পাতলা রুটি বেলা যাবে না। নয়তো সিঙ্গারার শেপ নস্ট হয়ে যাবে।
– পুর ঠান্ডা করে নিবেন।
– ভাজ দেবার সময় জোড়ার জায়গাগুলোতে পানি লাগিয়ে জোড়া দিবেন নয়তো তেলে ভাজার সময় জোড়া খুলে যাবে।
– সিঙ্গারা অল্প আঁচে সময় নিয়ে ভাজতে হয়।
– আঁচ বেশি দিলে সিঙ্গারার গায়ে ফোস্কা বা ছোট ছোট বাবল দেখা যায়।

যে ভূলে সমস্যা হয়-

১) তেল সম্পূর্ন পাকা  লাগবে

২) পাকা তেলে কাচা তেল মিক্স করা যাবে না

৩) তেল পাকার আগে সিংড়া দেওয়া যাবে না

৪) সিংড়া দেওয়ার পর পরিমিত আগুন দিত হবে

 

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন